দেশে এখনও ধর্মীয় বৈষম্য রয়েছেঃ জে এল ভৈৗমিক

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী জে এল ভৌমিক বলেছেন,বঙ্গবন্ধু তার ভাষনে বলেছিলেন এই দেশটি হবে একটি অসম্প্রদায়িক দেশ। ধর্মের ভিত্তিতে কোন বৈষম্য হবে না। এই কথাটি বিশ্বাস করে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। এমন একটি সম্প্রদায় যে সম্প্রদায়ে কোন রাজাকারের জন্ম হয় নাই। আমরা সবসময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সাথে আছি।  কিন্তু আজকে বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আমাদের সংগ্রাম করতে হবে কেন। আমাদের কেন সুরক্ষা আইন, সংখ্যালগু কমিশন গঠন, কিংবা অনশন ধর্মঘট করতে হবে কেন? আমরা তো অসম্প্রাদায়িক সরকার গঠনে কাজ করি। এই সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ্য হতে হবে। তাদের লেখাপড়াসহ সব জায়গায় প্রথম হতে হবে। সারাবিশ্বে সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন প্রথম পর্যায়ে আছে। কারণ তারা জঙ্গিবাদ বিশ্বাস করে না। তারা প্রতিবেশীর ক্ষতি করে না। তাদের মেধা আছে। প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কাজ করতে হবে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। আর এমন সাহসী ব্যক্তিকে দলের নেতা বানাতে হবে। মনে রাখতে হবে দেশের আড়াই কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করি। তারা সবাই বঙ্গবন্ধুর চেতনার মানুষ। আসুন আমরা পদের জন্য লড়াই ভুলে যায়। পদে না থেকেও কাজ করা সম্ভব যদি ইচ্ছা থাকে। পূজা উদযাপন পরিষদ করতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নেতৃত্বের লোভ বাদ দিতে হবে। যারা কাজ করবে তারা না চাইলেও জোর করে নেতা বানানো হবে। আজকে শুধু নেতা হলে হবে না কাজ করতে হবে।

শনিবার (২মার্চ) সকালে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্মেলনের উদ্বোধক বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শ্রী কাজল দেবনাথ বলেন, আমাদের মেরুদন্ড শক্ত করে কথা বলতে হবে। ৭২ সংবিধানে বলা হয়েছিল সাম্য, সকলের সমান অধিকার। সেখান থেকে আজকে আমরা যেখানে রয়েছি সেখানে মাথার উপর বিসমিল্লাহ তারপর রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম একটা জগাখিচুরির সংবিধান। এদেশে ভাষা আন্দোলন বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ বলেন সবখানে প্রথম ভূমিকা ছিল সনাতন ধর্মের লোকদের। আগে হিন্দু ধর্মের লোকদের ইতিহাস জানতে হবে এবং তারপর মেরুদন্ড শক্ত করে কথা বলতে হবে। আমরা উড়ে আসি নাই। আমাদের ইতিহাস রয়েছে এ দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল বলেন, চার মূলনীতির উপর ভিত্তি করে এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল। এর মধ্যে অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ। আপনারা জানেন এরশাদ সরকার যখন সংবিধানে বিসমিল্লাহ লিপিবদ্ধ করেছিল সে সময় পূজা উদযাপন পরিষদের জন্ম হয়েছিল। আজকে এই সংগঠন সারা বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় সংগঠন, আস্থার সংগঠন ও আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।

এসময় বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক সন্তোষ শর্মা, শ্রী গোপাল চন্দ্র দেবনাথ, শ্রী শুভাশীষ বিশ্বাস, সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তপন চক্রবর্তী, সদস্য শ্রী নারায়ণ দত্ত প্রদীপ, অধ্যাপক প্রণব কুমার সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, পরিচালনায় জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার সরকার। বিকেলে দ্বিতীয় অধিবেশনের মাধ্যমে সম্মেলনের সমাপ্তি করা হয়।

Share.