স্টাফ রিপোর্টারঃ
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেছেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি বিএনপি’র কতিপয় সদস্য ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর কতিপয় সদস্যরা আওয়ামী লীগের গুন্ডা বাহিনীর কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে এলাকায় রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছে।
বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কিশোরগঞ্জে গণহত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ১৬ বছরে আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের শাসন ব্যবস্থা কিভাবে ৩৬ দিনে ভেঙে পড়েছে। আপনারা যদি নিজেদেরকে নব্য ফ্যাসিবাদের জায়গায় অবতীর্ণ করতে চান, তাহলে শেখ হাসিনার পতনের কথা আপনাদেরকে স্মরণ করতে হবে। বাংলাদেশের গত তিনটি অবৈধ নির্বাচনকে ভারত সমর্থন দিয়েছে। গত ১৫ বছর দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা ভারতের গোলামি করেছে। শেখ হাসিনা ভারতে বসে দিল্লির সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য দেশের সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আবু হানিফ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি সেই বাংলাদেশে এখনো আমরা দেখছি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, যারা আমাদের ভাইদের উপরে গুলি চালিয়েছিল, যারা আমাদের ছাত্র জনতার উপর নির্মমভাবে হামলা করেছিল তারা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই আপনাদের ৬ মাস হয়ে গেছে, আপনাদের ‘হানিমুন পিরিয়ড’ শেষ হয়েছে। কিন্তু আপনারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হামলায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন নাই।
যারা পুলিশ, র্যাব, বিজিবিকে ব্যবহার করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালিয়েছিল। গণহত্যাকারীদের বিচার না করতে পারলে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে। আপনাদেরকে বলছি অনতিবিলম্বে গণহত্যার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসুন। শেখ হাসিনার দোসররা এখনো সক্রিয়, কিন্তু প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা রয়েছেন যারা সরকারি সহযোগিতায় কিংস পার্টি গঠনের চেষ্টা করছে এটা স্পষ্ট জুলাই আন্দোলনের সাথে বেইমানি।
তিনি তার বক্তব্য আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি এবং বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সাথে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের এক ধরনের যোগ সাজস হয়েছে। আমরা স্পষ্ট বলছি শেখ হাসিনার অপকর্মের বিরুদ্ধে বুক চেতিয়ে লড়াই করেছি কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করার জন্য নয়। সুতরাং যারা নব্য দখলদার এবং বালু ব্যবসার জন্য অবৈধ অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন আপনাদেরকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি ভবিষ্যতে যদি এগুলো করতে থাকেন আমরা রাজপথে থেকে এর প্রতিবাদ করব।
গণঅধিকার পরিষদের কিশোরগঞ্জ জেলার সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে যুগ্ম-আহ্বায়ক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আকন্দ মোহাম্মদ উজ্জ্বল, যুগ্ম আহবায়ক অভি চৌধুরী, কটিয়াদি উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের নেতা মহসিন, যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন তালুকদার, জেলা সভাপতি সোহাগ মিয়া, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা পায়েল চৌধুরী প্রমুখ।