নতুন সরকার পেলেও নতুন দেশ এখনো পাইনিঃ নাহিদ ইসলাম

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদেরকে রাজপথে নামতে হয়েছে যখন দেখেছি গণঅভ্যুত্থানের একবছর পরও মানুষের অধিকার হয়নি। সমাজে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের অভয়ারন্য তৈরী হয়েছে। যখন আমরা দেখেছি রাষ্ট্রযন্ত্র থকে দুর্নীতিকে চিরতরে বিলুপ্ত করা যায়নি। আমরা বলেছিলাম গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পুরনো ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা রয়েছে শেখ হাসিনার সংবিধানসহ সরকার ব্যবস্থা ছিল এই সকল নিয়ম পাল্টিয়ে নতুন রাষ্ট্র, নতুন সরকার তৈরী করতে হবে। কিন্তু আফসোসের বিষয় আমরা নতুন সরকার পেলেও নতুন দেশ এখনও পায়নি। জাতীয় নাগরিক পার্টি আপনাদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ নতুন দেশ না গড়া পর্যন্ত আমাদের এই লড়াই চলতে থাকবে।

শনিবার (২৬ জুলাই) রাত ৯টায় কিশোরগঞ্জে সারাদেশে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা তো এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম যেখানে প্রত্যেকটা মানুষের কাছে নাগরিক সুবিধা পৌছাবে। প্রত্যেকটা মানুষের নাগরিকের মর্যাদা পাবে। কিশোরগঞ্জের মানুষ রাষ্ট্রপতি পেয়েছে কিন্তু শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার পায়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে শিক্ষক নাই, হাসপাতাল আছে চিকিৎসক নাই, যুব সমাজ আছে কিন্তু কর্মসংস্থান নাই, অনেক বাজেট আছে রাস্তা নাই। আপনাদের এই ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রপতি এই বাংলাদেশকে শেখ হাসিনার কাছে তুলে দিয়েছিল। মানুষের মানবাধিকার, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। এই কিশোরগঞ্জ থেকেই আপনারা সেই ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।

তরুণ নেতৃত্বকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল তরুণদের নেতৃত্বে। তরুণদের উপর আস্থা রেখে বাংলাদেশের মানুষ নেমে এসেছিল। আমরা আবারও বলছি এই তরুণদের উপর আস্থা রেখে আপনারা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগদান করুণ। তরুণরা রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি। গণঅভ্যুত্থানের পরেও যদি তরুণদের কাজে লাগাতে না পারি, এই তারুণ্যের শক্তিকে যদি দেশ গঠনের কাজে লাগানো না যায় বাংলাদেশকে আর কখনও গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। সংস্কার, বিচার এবং নতুন সংবিধানের দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি। স্বৈরাচারের দোসররা এখনও বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে আছে। এই কিশোরগঞ্জে এখনও অনেক মামলার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি। শহীদ পরিবারকে এখনও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আহত যোদ্ধাদের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হুমকি দিচ্ছে। আমরা দেখতে চাই এই সকল সন্ত্রাসীদের কারা শেল্টার দিচ্ছে। যারা শেল্টার দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

এর আগে রাত ৮টায় শহরের পুরাতন স্টেডিয়াম থেকে পদযাত্রা করে পুরানথানা এলাকায় সমাবেশস্থলে যান। এনসিপি’র কর্মসূচিকে ঘিরে পুরো শহর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেন। শহরের প্রধান সড়কে সমাবেশের আয়োজন করায় সমাবেশ শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে থাকে।

এসময় জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমীন, যুগ্ম সদস্য সচিব আহনাফ সাঈদ খান, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক আকরাম হোসেন রাজ, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক খায়রুল কবির বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য স্বমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি, যুগ্ম সদস্য সচিব ডাঃ তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন, সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।

Share.