হাথুরুসিংহে এমন ব্যর্থতার জবাব দেবে কি?

0

অন্যায় হবে আপনার কাঁধে এ ওজন চাপিয়ে দেওয়াটা। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আপনি অনেক দিয়েছেন। আপনার হাত ধরে অনেকদূর এগিয়েছে বাংলাদেশ। তার পরও বলতে হয়, আমাদের ছেলেরা সেভাবে ধরে রাখতে পারেনি কোচের শিক্ষাকে।

বাংলায় একটি বহুল ব্যবহৃত প্রবচন আছে। এ প্রশ্নে আমরা সেই প্রবচনের দ্বারস্থ হতে পারি। প্রবচনে বলা হয়েছে, ‘কুকুরের পেটে ঘি হজম হয় না।’ আমাদের ক্রিকেট দলের সদস্যরা (বিশেষ করে সিনিয়ররা) সে অবস্থার মধ্যে যেন নিজেদের ভাসিয়ে দিয়েছেন। তাদের পেটে ঘি পড়েছে। সে ঘি হজম করার ক্ষমতা সম্ভবত আজ আর তাদের নেই। বিলাসবহুল জীবনযাপনের মধ্যে তাদের হজম শক্তি ক্রমশই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। তা না হলে নিউজিল্যান্ড সফরের শুরুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই পরিণতি হবে কেন?

নতুনদের নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠছে না। পুরনোদের দিকেই সবার তর্জনী উঠছে। এই পুরনোরা যখন নতুন ছিলেন, তখন তাদের মাঝে যে প্রতিভার বিচ্ছুরণ দেখা গেছে, আজ যেন তার বিন্দুমাত্রও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তাদের খেলা দেখে কখনই মনে হচ্ছে না, তারা একটি দেশের হয়ে খেলতে নেমেছেন। এখানে তারা একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। কিন্তু শুরুতে তা মনে হয়নি।

কেন এমন অবস্থা বাংলার টাইগারদের? সোজা কথায় যদি বলতে হয়, এরা কেউই এখন দেশের জন্য খেলেন না। খেলেন আইপিএল, বিপিএল খেলার যোগ্য হয়ে ওঠার লক্ষ্যে। দেশের হয়ে যখন খেলেন, তখন তারা দলে টিকে থাকার জন্য যতটুকু প্রয়োজন তার বেশি পারফর্ম করতে নারাজ। আর সে কারণেই এখানে তাদের ধৈর্যের কোনো পরীক্ষা দিতে হয় না। কোনোভাবে ৩০ থেকে ৫০ রান করতে পারলেই যেন কাজ শেষ। এ রকম লক্ষ্য নিয়ে খেললে বাংলাদেশ ক্রিকেট কখনই বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের মর্যাদা বাড়াতে সক্ষম হবে বলে আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না।

আমরা মনে করি, দেশের জন্য যখন কোনো ক্রিকেটার খেলবেন; তখন তার মধ্যে দেশপ্রেমের ছোঁয়া থাকবে। অন্তত নিউজিল্যান্ড সিরিজে (ওয়ানডে) তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার নির্লজ্জ প্রকাশ ঘটেছে। টার্গেট ২৫২। এক উইকেটে ১০১ রান করার পরও শেষ পর্যন্ত হেরেছে বাংলাদেশ। ক্রিকেট দলের সদস্যরা যদি এখানে টেস্ট ক্রিকেটের মতোও খেলত, তাহলেও জয় সুনিশ্চিত ছিল বলে অভিজ্ঞ মহলেন অভিমত। কিন্তু তা তারা করেননি। অধিকাংশ খেলোয়াড়ই উইকেট থ্রো করে গ্যালারিতে ফিরে গিয়েছিলেন।

এসব ক্রিকেটারকে আমরা জানাতে চাই, ৩০ লাখ শহীদের রক্তে গড়া বাংলাদেশের ইজ্জত রক্ষায় যারা অবজ্ঞা করবেন তারা ১৬ কোটি মানুষের কাছে অবজ্ঞার পাত্রে পরিণত হবেন। খেলায় হার-জিত আছে। সবসময় আমরা জিততেও চাই না। আশাও করি না। যা চাই তা হলো, হারলেও প্রতিটি খেলোয়াড়ের খেলার মাঝে আমরা যেন দেশপ্রেমের গন্ধ খুঁজে পাই। যা আমরা অধিনায়ক মাশরাফির মধ্যে সবসময়ই পেয়েছি। এজন্য দেশবাসীর পক্ষ থেকে ক্রিকেট দলের অধিনায়কের প্রতি জানাই সালাম।

Info: protidinersangbad.com

Share.

About Author