স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চাঞ্চল্যকর নুরুন্নাহার হত্যার রহস্য উদঘাটন করে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত (২ডিসেম্বর) গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানার দেওড়া এলাকা থেকে নুরুন্নাহার হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে রুবেল আহাম্মদ (৪৪) কে গ্রেফতার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার গাগলাইল গ্রামের মৃত ইমাম হোসেনের মেয়ে নুরুন্নাহারের সাথে পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দী গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে বাছির উদ্দিনের বিবাহ হয়। স্বামী-স্ত্রী নারায়নগঞ্জে কাজের উদ্দেশ্যে গিয়ে গাউছিয়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেওয়ার পর স্বামীর বাড়িতে যেতে রাজি না হওয়ায় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দুরত্বের সৃষ্টি হয়।
গ্রেফতারকৃত রুবেল কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার নয়াকান্দি গ্রামের আব্দুল হামিদের পুত্র ঘটনার বছর খানেক আগে তার চাচী শাশুরীর বাড়িতে বেড়াতে যায়। এসময় নুরুন্নাহারের সাথে রুবেলের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়মিত রুবেল এবং নুরুন্নাহারের কথা হয়। এক পর্যায়ে নুরুন্নাহার অসহায়ত্বের কথা রুবেলকে জানালে রুবেল নুরুন্নাহারকে সেলাই কাজ শেখানোর কথা বলে করিমগঞ্জ পৌরসভার বেপারীপাড়ার রেনু মিয়ার বাসা ভাড়া করে দেয়। তাদের মধ্যে পরকিয়ার সর্ম্পক গড়ে ওঠে। এবং বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়।
নিহত নুরুন্নাহারকে কাপড়ের দোকান দেবে বলে তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয় রুবেল। পরে নিহত নুরুন্নাহার তার পাওনা টাকা ফেরত ও বিবাহের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে রুবেল কৌশলে চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর নুরুন্নাহারকে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড নিয়ে যায়। তারা দুইজন কটিয়াদী ও বাজিতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরাঘুরি করে রাতে এক পর্যায়ে কটিয়াদী উপজেলার আছমিতা এলাকায় শ্বাসরোদ্ধ করে ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় রুবেল। পরেরদিন ১৪ নভেম্বর কটিয়াদী থানা পুলিশ খবর পেয়ে নুরুন্নাহারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
১৬ নভেম্বর নিহতের ভাই জয়নাল আবেদীন কটিয়াদী থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। কটিয়াদী থানা পুলিশ মামলার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় অবশেষে ১৮ নভেম্বর পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে কিশোরগঞ্জ পিবিআই-এর কাছে মামলাটি হস্তান্তর করে।
পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক জামীর হোসেন জিয়া মামলাটি তদন্ত করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামি রুবেল আহাম্মদকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত রুবেল আহাম্মদ ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে। পিবিআই পুলিশ সুপার মোঃ শাহাদাত হোসেন পিপিএম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।