কিশোরগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে প্রতিরোধ মূলক সমাবেশ

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ

কুষ্টিয়ায় জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে “জাতির পিতার সম্মান রাখবো মোরা অম্লান” এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে কিশোরগঞ্জ জেলার সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি প্রতিরোধ মূলক সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি হল রুমে প্রতিবাদ সমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।

এসময় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী সভাপতিত্বে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ সায়েদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপি এম (বার), নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রথম আদালতের বিচারক কিরণ শংকর হালদার, দুই এর বিচারক মোঃ সোলায়মান, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান, যুগ্ম জেলা জজ আদালত ১এর বিচারক আ ন ম ইলিয়াস, যুগ্ম জেলা জজ জুলকার নাঈম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুন নূর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডাঃ এহসানুল হক, প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ আ ন ম নৌশাদ খানসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ ও কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, যে নামটি বাংলাদেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে তা হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সকল শ্রেণি-পেশা-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আপামর বাঙ্গালী জাতি মহান মুক্তিযু্দ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এদেশের স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য ছিনিয়ে আনে। বাংলাদেশ তথা বাঙ্গালী জাতির অস্তিত্বের সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুই ছিলেন পথ প্রদর্শক, আলোর দিশারী ও সার্বজনীন নেতা। বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে বঙ্গবন্ধুর নাম তাই অবিচ্ছেদ্যভাবে ‍যুক্ত।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে তৎকালীন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সদ্য- স্বধীন রাষ্ট্রকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ পুনর্গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনা মূলত সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের চেতনা ও অস্তিত্বের মর্মমূলে কুঠারাঘাতের সামিল। বক্তারা দৃড়ভাবে তাদের বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য চিরায়ত বাঙ্গালী জাতির অবিনাশী চেতনার মূর্ত প্রতীক।

বিভিন্ন জাতি রাষ্ট্রের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিকাশের পরিচায়ক হিসেবে আধুনিক রাষ্ট্রসমূহে এমনকি অনেক মুসলিম দেশে মহান নেতাদের ভাস্কর্য রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন সংগ্রাম, তাঁর ভাষণ আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কতিপয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হানার মাধ্যমে মূলত বিশ্বজনীন ঐতিহ্য ও চেতনাকেই আঘাত করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু আজীবন স্বপ্ন দেখেছেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধুর সে স্বপ্ন এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে- এগিয়ে যেতে হবে আরও অনেক দূর। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে হলে, শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হলে, প্রকৃত দেশপ্রেম নিয়ে সচেতনতার সঙ্গে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। সেটাই হবে জন্মশতবর্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের শ্রেষ্ঠ উপায়।

অবিলম্বে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গার সাথে জড়িত দুস্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং একই সাথে নতুন ও অনাগত প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনা ছড়িয়ে দিতে সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানান।

Share.

About Author