প্রতিনিধি ভৈরবঃ
ভৈরবে গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী পুরানগাওঁ গ্রামে কালা মিয়ার সাথে একই বংশের মজনু মিয়ার জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে । এরই জের ধরে গত ১৪ জুন সোমবার সকালে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে । সংঘর্ষের এক পর্যায়ে কালা মিয়ার পুত্র বাবু মিয়া (২২ ) গুরুতর আহত হলে তাকে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকৎিসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন । এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয় ।
কিন্ত এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৭ জুন বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিপক্ষ কালা মিয়ার সমর্থকরা ইউপি সদস্য ( মেম্বার ) গোলাবুরের একটি পাকা ভবন ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে ভবনের ভিতরের আসবাবপত্র ও নগদ টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে । বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ।
জানা যায়, বাবু হত্যার ঘটনায় গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি সদস্য) গোলাবুরসহ ৪৩ জনের নাম উল্ল্যেখ করে নিহতের পিতা কালা মিয়া বাদী হয়ে ভৈরব থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করেছে । এ বিষয়ে নিহতের পিতা কালা মিয়া জানান, মজনু মিয়ার সাথে জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তার বিরোধ চলে আসছে। ঘটঁনার দিন তার পুত্র এরশাদ মিয়ার বাড়িতে গেলে প্রতিপক্ষরা তার পুত্রের উপর অর্তকিত হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে । এ সময় পুত্রকে বাঁচাতে গেলে তাকে ও তার স্ত্রীকে ও মারধোর করে আহত করে । তবে ইউপি সদস্য গোলাবুরের ভবন ভাংচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মেম্বার অনৈতিকভাবে মজনুর পক্ষ নিয়েছে । মেম্বারের ইন্ধনেই তার পুত্রকে হত্যা করা হয়েছে ।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ এর মেম্বার গোলাবুর মুঠোফোনে বলেন, নিহত বাবুর বাবা কালা মিয়া উদ্দেশ্যমূলক ভাবে আমাকে তার ছেলে হত্যা মামলার ২নং আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন । অথচ ঘটনার সময় আমি আমার নিজ গৃহে গুমিয়ে ছিলাম । পূর্বশ্রত্রুতার জেরধরে নিহত বাবুর বাড়ীর লোকজন আমার দিকে দলবল নিয়ে এসে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় পরে আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না থাকায় ঢাকায় চলে যায় । ইউপি সদস্য গোলাবুরের স্বজন, রেহেনা, নাদিরা ও রিপা জানান, তারা পরিকল্পিতভাবে গোলাবুরকে ফাসিঁয়েছেন । এছাড়া গোলাবুরের ১ তলা বিশিষ্ট ভবনটি ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে ও লোট-পাট করে ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছেন । তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান ।
এ বিষয়ে গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কাজি গোলাম সারোয়ার জানান, মজনু ও কালা মিয়া একই বংশের ২ জন চাচাতো জেঠাতো ভাই । তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে । আমরা একাধিকবার সালিশী বৈঠকে মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি । কিন্ত একপক্ষ রায় মানলে ও অন্য পক্ষ মানেনা ।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহিন জানান, জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষে বাবু নামে ১ জন খুন হয়েছে । এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর কয়েকজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে । বাড়ি-ঘর ভাংচুরের বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি । বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে ।