কিশোরগঞ্জে প্রশাসনিক অনিয়মের বেড়াজালে বন্ধী টিসিবির পণ্য বিক্রয়

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ

কিশোরগঞ্জে টিসিবির পণ্য বিক্রয় প্রশাসনিক অনিয়মের বেড়াজালে বন্দী থাকার অভিযোগ উঠেছে। বঞ্চিত হচ্ছে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। সরকার নির্ধারিত মূল্যে টিসিবির পণ্য ক্রয়ের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষায় থেকেও কারো ভাগ্যে জোটছে না টিসিবির তেল, ডাল ও চিনি। যে পণ্য সাধারণ মানুষ পাওয়ার কথা সে পণ্য অবলিলায় চলে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন ও জজ কোর্ট কর্মচারীদের কাছে। পণ্য না পাওয়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এ যেন ‘শুটকির নৌকায় বিড়ালের চৌকিদারী’। জেলার নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষকে টিসিবির পন্য দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন শুধু মাত্র তদারকির দায়িত্বে থাকার কথা রয়েছে। অথচ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসন গরীবের পেটে লাথি দিয়ে টিসিবির পণ্য দিয়ে দিচ্ছে প্রশাসনে কর্মরত কর্মচারীদের।

এমন অভিযোগে আজ সোমবার (১২ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক করিডোরে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়। পণ্য ক্রয়ের জন্য অপেক্ষমান মহিনন্দ ইউনিয়নের কলাপাড়া গ্রামের রহিমা আক্তার, সাফিয়া আক্তার, কবির মিয়া, রশিদাবাদ ইউনিয়নের লতিবপুর গ্রামের সেলিনা আক্তার, মাইজখাপন ইউনিয়নের নীলগঞ্জ গ্রামের বেদেনা আক্তার, লতিবাবাদ ইউনিয়নের সাদুল্লাহর চর গ্রামের জোৎ¯œা বেগম, স্বাধীন বাজারের দোলেনা আক্তার, খোশ নাহার, গাইটাল এলাকার কমলা আক্তারসহ অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ জানান, টিসিবির পণ্য ক্রয়ের জন্য সকাল থেকে অপেক্ষায় থাকলেও তাদেরকে পণ্য দেওয়া হচ্ছে না। দীর্ঘদিন যাবত ঘুরে পণ্য না পাওয়ায় ভুক্তভোগীদের হতাশা বিরাজ করছে।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে কিশোরগঞ্জ কালেক্টরেট ৩য়-৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ইউনিয়নের কার্যালয়ে গেলে টিসিবির পণ্য মজুদ দেখতে পাওয়া যায়। এসময় কর্মচারীদের সভাপতি শফিকুর রহমান তুষার জানান, প্রশসানের নির্দেশে গত রবিবার (১১ জুলাই) রাতে মাহাবুবুর রহমান রতন নামের টিসিবি ডিলার মজুদকৃত তেল, ডাল ও চিনি জেলা প্রশসানের কর্মচারীদের নিকট বিক্রির জন্য আমাদের কার্যালয়ে রেখে যান। এসব মালামাল দেওয়া হচ্ছে।

এবিষয়ে টিসিবি ডিলার মাহাবুবুর রহমান রতন জানান, ময়মনসিংহ থেকে বরাদ্দ পাওয়া চার টন টিসিবি পণ্য জেলা প্রশসানের ব্যবসা ও বানিজ্য শাখার উচ্চমান সহকারি আবু তাহেরর নির্দেশে কর্মচারীদের দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত আবু তাহেরকে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি জানান, এনডিসি মাহমুদুল হাসানের আদেশক্রমে টিসিবির পণ্য কর্মচারীদের কাছে বিক্রয় করা হয়েছে।

এ বিষয়ে এনডিসি মাহমুদুল হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের ন্যায় জেলা জজকোর্টে কর্মরত কর্মচারীরাও অন্য ডিলারের কাছ থেকে টিসিবি পণ্য শুধুমাত্র জজকোর্টে কর্মরত কর্মচারীদের কাছে বিক্রয় করা হয়েছে।
টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানাচ্ছে, প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে কিশোরগঞ্জে অন্তত কয়েকজন টিসিবি ডিলার ময়মনসিংহ থেকে বরাদ্দ পাওয়া মালামাল কিশোরগঞ্জে বিক্রয়ের জন্য পৌঁছার আগেই রাস্তায় সুবিধাজনক স্থানে নিয়মিত বিক্রি করে আসছেন।

Share.