২০১২ সালের এই দিনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইর্য়কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বাংলাদেশ সাহিত্যের এই শক্তিমান লেখককে স্মরণে নানা আয়োজন রয়েছে। গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে লেখকের স্ত্রী শাওনসহ পরিবারের সদস্যরা ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর প্রকাশকদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। নুহাশ পল্লীর পার্শ্ববর্তী এতিমখানার লেখকের পছন্দের খাবার বিতরণ করা হবে।
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় হুমায়ুন আহমেদের নিজগ্রামে প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের উদ্যোগে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হবে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, খতমে কোরআন ও শোক র্যালীর আয়োজন করা হয়েছে। চক্ষুরোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানের জন্য বিদ্যাপীঠের মাঠে চক্ষু শিবির বসানো হবে বলে জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটি। সদর উপজেলায় হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি সংসদ ও চর্চা সাহিত্য আড্ডার যৌথ উদ্যোগে শোক র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে হুমায়ূন ভক্তদের গড়া সংগঠন ‘হিমু পরিবহন’ এর পক্ষ থেকেও নানা কর্মসূচি রয়েছে। সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে ‘নদ্দিউ নতিম’ মঞ্চায়ন করবে ম্যাড থেটার। বেসরকারি টিভি ‘চ্যানেল আই’ দিবসটি উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৩ই নভেম্বর ময়মনসিংহের নেত্রকোণা জেলার কেন্দ্রয়ার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একজন পুলিশ কর্মকর্তা শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা ফয়েজ। কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও রম্য সাহিত্যিক ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবিব তাঁর দুই ভাই। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে লেখকের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
হুমায়ুন আহমেদের রচিত উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে- নন্দিত নরকে (১৯৭২), শঙ্খনীল কারাগার (১৯৭৮), আমার আছে জল (১৯৮৫), এইসব দিনরাত্রি (১৯৯০), কৃষ্ণপক্ষ (১৯৯২), নৃপতি (১৯৯১), আগুনের পরশমণি (১৯৮৬), অনিল বাগচীর একদিন (১৯৯২), শ্যামল ছায়া (২০০৩), জোছনা ও জননীর গল্প (২০০৪), দেয়াল (২০১২), কাঠপেন্সিল (২০১০), লীলাবতির মৃত্যু (২০১৪) প্রভৃতি। সাহিত্যকর্মে অবদানের স্বীকৃত স্বরূপ তিনি বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৮১), শিশু একাডেমী পুরস্কার, একুশে পদক (১৯৯৪), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৪), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসুদন পদক (১৯৮৭) প্রভৃতি।
- Info : mzamin.com