আল্পনার রঙে রঙিন হলো কিশোরগঞ্জ হাওরের সবুজ প্রকৃতি

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ

এবার আল্পনার রঙে রঙিন হলো কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রামের জিরো পয়েন্টের ১৪ কিলোমিটার অলওয়েদার সড়ক পথ। যা বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা অঙ্কন বলে দাবি করেছেন কর্তৃপক্ষ। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখানোর জন্যও আবেদন করবেন তারা। যার নাম দেয়া হয়েছে আলপনায় বৈশাখ১৪৩১ উৎসব।

রোববার পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় মিঠামইন জিরো পয়েন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তুলির আঁচড়ের মাধ্যমে আলপনায় বৈশাখ১৪৩১ উৎসবের সমাপ্তি করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এসময় ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে দেখা গেছে কিশোরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিককে সাথে নিয়ে আপ্লনা রঙিন অলওয়েদার সড়কে মোটরসাইকেল চালিয়ে আনন্দ উপভোগ করেন।

অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুর রহমান, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকাল টায় এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েনশিয়াল মর্কেটিং লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন জিরোপয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অলওয়েদার সড়কে আলপনা অঙ্কনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেশের সবচেয়ে বড় আলপনা উৎসবআলপনায় বৈশাখ ১৪৩১ যা রোববার সকালে শেষ হয়।

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থেকে অষ্টগ্রামের ১৪ কিলোমিটার অলওয়েদার সড়কে প্রায় ৭০০ শিল্পীর তুলিতে বৈশাখের মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয়া এবং একইসাথে বিশ্বরেকর্ড গড়ার অনবদ্য প্রত্যয় নিয়ে শেষ হলো এই উৎসব। বাঙালির আবহমান সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার লক্ষ্যে এবার অষ্টমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছেআয়নায় বৈশাখ ১৪৩১উৎসব।

ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “কোভিড১৯ এর বিরতির পর পহেলা বৈশাখের আলপনার উৎসব আবার ফিরে আসায় বাঙ্গালী চেতনার উদযাপন আবার তার চেনা রূপ লাভ করেছে। আয়োজকদের প্রতি আমি শুভকামনা জানাচ্ছি আশাবাদ ব্যক্ত করছি যেন তারা ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন করে দেশবাসীকে আনন্দে ভাসাতে পারে। আয়োজন ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাবে।

বাংলালিংকএর চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বৈচিত্রময় সব উৎসব উদযাপনে বাংলালিংক গভীরভাবে দায়বদ্ধ। দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব পহেলা বৈশাখ সকল উৎসবের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলালিংকএর এই আয়োজন ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি দেশীয় উৎসবকে তুলে ধরার একটি প্রয়াস।

বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডএর ম্যানেজিং ডিরেক্টর, রুপালী চৌধুরী তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেনআলপনার বিশ্বরেকর্ড পড়তে আমাদের অংশগ্রহণ নিজেদের সামর্থ্যকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মাধ্যমে ইতিহাস তৈরিতে আমাদের উৎসর্গকে প্রকাশ করে। সামনের দিনগুলোতেও আমরা এমন রঙিন স্বরণীয় বৈশাখ পালন করতে আশাবাদী।

এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটিএর গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইরেশ জাকের আলপনায় বৈশাখ উৎসবের পুনর্জাগরণে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, “দেশব্যপী বৈশাখের এই আয়োজনগুলো বাঙালি সংস্কৃতি সৃষ্টিশীলতার বহিঃপ্রকাশ। বাংলালিংক বার্জারের সাথে যৌথভাবেআলপনায় বৈশাখ ১৪৩১আয়োজন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত কারণ এশিয়াটিক বাংলাদেশের সমৃদ্ধ করবে।

হাওরের গৃহবধূ নিঝুম আফরোজ জানান, আমাদের বৈশাখ মানে ধান ঘরে তুলার আনন্দ। তবে এবারের বৈশাখে আল্পনার রঙে রঙিন হলো আমাদের অলওয়েদার সড়ক। এতে আমাদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।

হাওরে ঘুরতে আসা ব্যাংকার মাসুদুর রহমান জানান, আসাধারণ অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। কিশোরগঞ্জের পুলেরঘাট থেকে ঘুরতে আসছি। সেই সকাল ৬টায় ঘুম থেকে ওঠে প্রুস্তুতি নিয়ে এসেছি ইতিহাসের সাক্ষী হতে।

স্থানীয় হাওরবাসী মুজাহিদ সরকার জানান, হাওরের এই অলওয়েদার সড়কটি এমনিতে সারাদেশে ভাইরাল। এবার এখানে আলপনা অঙ্কন করায় হাওরে আরও পর্যটক আসবে যাতে করে হাওরের সাধারণ মানুষের লাভ হবে।

ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদী জানান, চারদিকে সবুজে ঘেরা মাঝখানে এই আল্পনাব যা মনোমুগ্ধকর। এই ১৪ কিলোমিটার আল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বে উপস্থাপন করবে। আমি সবাইকে বলবো আপনারা আসেন এসে দেখেন।

Share.