আব্দুল্লাহ আল সুমন, ঠাকুরগাঁওঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে তিন সাংবাদিকের পিঠের চামড়া তুলে হত্যার হুমকি দিয়েছেন এক যুবলীগ নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর। শুক্রবার রাতেই এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছেন সাংবাদিকরা।
০১ অক্টোবর শুক্রবার রাতে সংবাদ সংগ্রহ কালে তিন সাংবাদিক এই হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। হুমকির স্বীকার এই তিন সাংবাদিক হলেন, ঠাকুরগাঁও জেলায় কর্মরত জাগো নিউজের প্রতিনিধি তানভীর হাসান তানু, রাইজিংবিডির প্রতিনিধি মইনুদ্দীন তালুকদার হিমেল ও দি মুসলিম টাইমস এবং স্থানীয় পত্রিকা লোকায়নের নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল রানা। এই ঘটনা জেলার সচেতন জনসাধারণ জানার পর থেকেই নিন্দার ঝড় উঠে। অনেকে ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে নিন্দা জানিয়েছে।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদে শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি সংবাদের তথ্য সংগ্রহে যায় এই তিন সাংবাদিক। তথ্য ছিলো যে, অবৈধ কিছু সংখ্যক বিড়ির বস্তা আটক করা ও এ বিষয়ে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির অস্বচ্ছতার রয়েছে । ঘটনাস্থলে এর সত্যতা পেয়ে সেই অবৈধ মালের মালিক জতীশ ও নুকুলের সাক্ষাতকার নিতে তার বাসায় যান তারা। তবে অভিযুক্তরা বাসায় না থাকায় ফিরে যায় সাংবাদিকরা। ফেরার পথে নুকুলের নাম্বার থেকে সাংবাদিক সোহেল রানার মুঠোফোন কল আসে এবং নুকুল একজনের সাথে কথা বলতে বলে। ওই ব্যক্তি মুঠোফোনে বলেন, আমি ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর জামিরুল ইসলাম বলছি, আমার এলাকায় কী কাজে গিয়েছেন? বেশি বারাবারি করবেন না। এমন কথা বলার পর তিনি সাংবাদিকদের গায়ের চামরা ছিলে ফেলার কথা বলেন এবং সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং নানারকম হুমকিসহ হত্যার হুমকি দেন।
জামিরুল ইসলাম জেলা সদরের শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঠাকুরগাঁও সদর পৌরসভার ০১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এই বিষয়ে অভিযুক্ত জামিরুল ইসলামেরর কাছে হত্যার হুমকীর বিয়ষটি জানতে চাইলে বিয়ষটি এড়িয়ে গিয়ে ফোনটি কেটে দেন।
ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আহমেদ বলেন, এরকম হুমকি স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টি করছে। এই কাজটি অন্যায় দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়ার লক্ষেই করা হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। হুমকির একটি অডিও রেকর্ড আছে জানিয়ে তিন সাংবাদিক বলেন, এমন হুমকির পর আমরা মনে করছি স্বাধীন সাংবাদিকতায় তিনি ক্ষমতার দাপটে বাঁধার সৃষ্টি করেছেন। এমতাবস্থায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিছি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীরুল ইসলাম জানান, সাংবাদিকদের হত্যার হুমকীর বিয়ষটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।