স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জে নিজ সন্তানকে হত্যার অপরাধে মাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে ১০ হাজার টাকা আর্থিক অর্থদ- প্রদান করেন বিচারক। রোববার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ৩৬ বছর বয়সী মোছাঃ আছমা আক্তার কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের পূর্বচরপাড়া গ্রামের মোঃ সুরুজ মিয়ার মেয়ে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০০৮ সালে নাটোরের আশরাফ উদ্দীন নামে একজনকে নিজের পছন্দে বিয়ে করেন আছমা আক্তার। বিয়ের দুইবছর পর তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ২০১৩ সালে রাজধানীর মহাখালীতে এক সড়ক দূর্ঘটনায় তার স্বামী আশরাফ মৃত্যুবরণ করেন। পরে মেয়ে শিউলী আক্তারকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন আছমা।
বাবার বাড়িতে থাকাকালীন সময়ে ২০১৭ সালে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এলাকার আবদুল কাদের নামে একজনকে বিয়ে করেন আছমা। বিয়ের পরে কাদের প্রায়ই তার শ্বশুর বাড়িতে আসতো। দুই/তিনদিন থেকে আবার চলে যেতো। মাঝেমধ্যে আছমাও তার মেয়েকে নিয়ে কাদেরের বাড়িতে বেড়াতে যেতো। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে কাদের শ্বশুর বাড়িতে আসা বন্ধ করে দেন। কিন্তু আছমা ঠিকই কাদেরের কাছে আসা-যাওয়া করতো। হঠাৎ একদিন সেখান থেকে এসে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথাবার্তা কমিয়ে দেন।
২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তার ভাইয়ের শ্বাশুড়ী তাদের বাড়িতে আসলে ঘরে ঢুকতে বাধা দেন আছমা। এ নিয়েও পরিবারের সদস্যদের সাথে মনোমালিন্য হয়। পরদিন সকালে তার ১০ বছর বয়সী শিউলী আক্তারকে স্কুল থেকে ডেকে এনে জোরপূর্বক ইদুঁর মারার একটি ট্যাবলেট খাওয়ান। পরে তার মা মনোয়ারা বেগম বাধা দিলে তাকে ধাক্কা দিয়ে মোবাইল এয়ারফোনের তার পেঁচিয়ে মেয়ে শিউলীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই শিউলীর নানা সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে মেয়ে আছমাকে একমাত্র আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান তদন্ত শেষে আছমাকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।