তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হাওরের তিন ডাকাত গ্রেফতার

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ

জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: হাঁস বিক্রয়ের কথা বলে ডাকাতি করার দায়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে মিঠামইন পুলিশ। তাঁরা বিভিন্ন কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করত। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ভোররাতে পাশ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কামালপুর গ্রামের কুশিয়ারা নদীর শান্তিপুর বাজার ঘাট থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কামালপুর গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে মোঃ কামাল হোসেন (৩৭), একই গ্রামের আজিদ মিয়ার ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক (২২) ও মধু মিয়ার ছেলে মোঃ কবির হোসেন ওরফে কোব্বাত মিয়া। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, গত ১১ আগস্ট কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার মোঃ ছেতু মিয়া, একই উপজেলার মোঃ হারিছ মিয়া ও পাশ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার মোঃ মোশাররফ মিয়া মিঠামইনে হাঁস কিনতে আসেন। পরে হাওরের অলওয়েদার সড়কের মিঠামইন জিরো পয়েন্টে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় এক ব্যক্তির সাথে হাঁস ক্রয়ের কথা হয়। ওই ব্যক্তি হাঁস বিক্রয়ের কথা বলে তাদের মিঠামইনের ঢাকী ব্রিজে নিয়ে যায়। ঢাকী ব্রিজে পৌঁছানোর পর হাঁস দেখানোর জন্য একটি ইঞ্জিন চালিত কাঠের নৌকায় উঠে তাদের নিয়ে হাওরের পূর্ব দিকে যেতে থাকে। প্রায় ১০ মিনিট যাওয়ার পর নৌকার ছৈয়ের ভিতরে পাটাতনের নিচে লুকিয়ে থাকা ৫ থেকে ৬ জন ডাকাত পাটাতন থেকে বেরিয়ে আসে। পরে রামদা, ছুরি, চাকু, চা-পাতি দিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে রশি ও গামছা দিয়ে তাদের হাত-পা মুখ বেঁধে ফেলে।

এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মেরে হাঁস কেনার জন্য তাদের সাথে থাকা নগদ এক লক্ষ সাত হাজার টাকা ও তাদের ০৫ টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা কৌশলে গাজীপুরের বিকাশ নাম্বারে স্বজনদের পাঠানো আরও এক লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা আদায় করে। পরে গাজীপুরে থাকা ডাকাত দলের সদস্য বিভিন্ন বিকাশ নাম্বারে সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট করে টাকা পাঠায়।

ডাকাতদলের সদস্যরা মোট দুই লক্ষ ঊনসত্তর হাজার পাঁচশত পঞ্চাশ টাকার মালামাল লুন্ঠন করে। ওইদিন ডাকাতি শেষে রাত ৮টার দিকে মোঃ ছেতু মিয়া, মোঃ হারিছ মিয়া ও মোঃ মোশাররফ মিয়ার হাত পায়ের বাঁধন খুলে মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের ছত্রিশ এলাকায় হাওরের কোমর সমান পানির মধ্যে ফেলে রেখে চলে যায়।

এ ঘটনার ১২ দিন পর গত ২৩ আগস্ট ৬ থেকে ৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মিঠামইন থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী মোঃ ছেতু মিয়া। মামলার পর বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ভোর রাতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির সময় ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ও ডাকাতির ১৩ হাজার টাকা এবং ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অষ্টগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামুয়েল সাংমা, মিঠামইন থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Share.